Tuesday, 24 May 2022

নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় এর ইতিহাস।The history of the Nalanda University.

সূচনা-  প্রাচীন ভারতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক                 অবিস্মরণীয় নাম হল নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাচীন ভারত তথা এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন ও শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রূপে দীর্ঘ কাল খ্যাতির শীর্ষে বিরাজমান ছিল এই নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। নালন্দা শব্দের অর্থ হল জ্ঞান বা জ্ঞানের আগ্ৰহ। গুপ্ত সম্রাট কুমার গুপ্ত বর্তমান বিহারের নালন্দা জেলায় নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে গুপ্ত,পাল বংশের রাজারা পৃষ্ঠপোষকতা করেন।

পরিচালন ব্যবস্থা-  নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল একটি অবৈতনিক আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি সরকারি অনুদানে চলত। দেশ বিদেশের বহু ছাএ এখানে পড়তে আসতো কিন্তু এখানে পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া হতো। তার ফলে এখানে ভর্তি হওয়া খুব একটা সহজ ছিল না। এছাড়াও ভর্তি হওয়ার পর একাদিক্রমে সাত আট বছর ধরে পোড়াশোনা করতে হতো।

পঠন পাঠন-  নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট 15টি বিষয়ে পড়ানো হতো। বিষয় গুলির মধ্যে অন্যতম ছিল বেদ, বৌদ্ধ দর্শন, ব্যাকরণ, আয়ুর্বেদ, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা,অঙ্ক, ইতিহাস।তবে সব বিষয়েই ছাএদের পড়ানো হতো। ছাএদের পড়ানোর জন্য প্রায় 1500 শিক্ষক থাকতো। এদের মধ্যে অন্যতম ছিল আযভট্র,শীলভদ্র প্রমুখ পন্ডিত। এছাড়াও রত্নরঞ্জক, রত্নদধি, রত্নসাগর এই তিন ভাগে বিভক্ত একটি বিশাল লাইব্রেরি ছিল।

 ধ্বংস-  পাল আমলে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় তার হারানো গৌরব ফিরে পায়।পাল রাজা দেবপালের প্রয়াসে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় বৌদ্ধ ধর্ম ও সংস্কৃত চচার প্রধান কেন্দ্রে পরিনত হয়েছিল। কিন্তু 1993 সালে তুকি সেনাপতি বখতিয়ার খিলজী বিহারে হামলা চালায় এবং খিলজী বাহীনি এখানকার সৌধের সঙ্গে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেয়। এই ভাবে প্রাচীন ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের পতন ঘটে।

               অবশেষে বলা যায় যে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় যে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে ছিল তা ছিল এক কথায় বিস্ময়কর। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্বংস প্রাপ্ত আজও ইতিহাসের নীরব সাক্ষী রূপে দা৺ড়িয়ে রয়েছে।



Saturday, 12 June 2021

(1)চীনে নজরানা প্রথার উদ্ভবের ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা করো? অথবা-নজরানা প্রথার বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো?

            চিনা সম্রাট প্রাচীনকালে সামন্তপ্রভুদের জমি দান করেন এবং তার বিনিময় সামন্তপ্রভুদের এলাকায় উৎপন্ন পণ্যসামগ্রী নজরানা হিসাবে গ্রহণ করতেন। পরবর্তীকালে দুর্বল প্রতিবেশী দেশগুলির কাছ থেকেও চিন তার প্রাধান্যে স্বীকৃতি হিসাবে নানা উপহার নজরানা হিসাবে গ্রহণ করতেন এই থেকে চীনে নজরানা সিস্টেম প্রচলিত হয়েছিল।
                   নজরানা প্রথা বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য ছিল যেমন-জাংগুয়ো তত্ত্ব অনুসারে চীন বিশ্বাস করতো যে-পৃথিবীতে মধ্যস্থলে তে অবস্থিত অর্থাৎ যে স্থানে স্বর্গের ছায়া পড়ে সেখানে ছিল চীন সাম্রাজ্য। এই বিশেষ অবস্থানের জন্য পৃথিবীর অন্যান্য সমস্ত জাতি চীনের অধীনস্থ। এই ধারণা থেকে চিন্তা দুর্বল প্রতিবেশী যথা করিয়া ,এনাম ,থাইল্যান্ড, লুচু প্রভৃতি দেশকে নিয়ে গড়ে তুলেছিল জাতিসমূহের পরিবার। চীন মনে করত পদমর্যাদায় সে সর্বোচ্চ আর অন্যরা চীনের নিয়ন্ত্রণাধীন। তাই আনুষ্ঠানিক আনুগত্যের বিনিময় প্রয়োজনীয় সময়ে রাষ্ট্রগুলোকে সাহায্য করত। আনুগত্যের প্রমাণ হিসাবে নজরানা আদায় করত পরবর্তীকালে ইউরোপীয় বণিকরা চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনের আবেদন জানালে এবং তার প্রচেষ্টা চালালে শেখানেও নজরানা প্রথা কার্যকারী হয়। আফিম যুদ্ধের আগে পর্যন্ত ইউরোপীয় বণিকরা এই প্রথা মেনে চলে। পাশ্চাত্য দেশগুলো চীনে ব্যবসা করতে এলে
চীনের সম্রাট বছরে নির্দিষ্ট একটি দিনে  তাদের কাছ থেকে নজরানা নিতেন। আসলে চীনের ধরনা ছিল সকল রাষ্ট্রের তার অধীন করদ রাষ্ট্র। তাই নজরানা দেওয়ার সময় প্রতিবেশী বা বিদেশে সকলকে চিনা দরবারে "কৌটাও" প্রথায় নতজানু হয়ে নজরানা দিতে হতো।
           
                      নজরানার পরিমাণ কত সময়ের ব্যবধানে পাঠাতে হবে এবং কোন পথ ধরে চীনে নজরানা আসবে এসব নির্ধারিত করতেন চিন সম্রাট তার দরবার থেকে। ইউরোপীয় রাষ্ট্রদূত ও বণিকেরা প্রথম দিকে নজরানা প্রথা ও  কৌটাও রীতি মেনে নিলেও ক্যান্টন বাণিজ্যে আধিপত্য স্থাপন এরপর তারা তিন সম্রাটের কাছে এ অপমানজনক প্রথা উচ্ছেদের দাবি জানাই। বহু ইউরোপীয় বণিক এই প্রথা সক্রিয় বিরোধিতা করে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো জাঙ্কট্রেড এর মাধ্যমে চীনে ব্যবসা চালাতে থাকে। নজরানা প্রথা ছিল অত্যন্ত সাপেক্ষ। তাই করদ রাষ্ট্রগুলি নজরানা প্রথা বহির্ভূত জাঙ্ক বাণিজ্যের সঙ্গে নিজেদের কে যুক্ত করে। তাই উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে নজরনা প্রথার প্রয়োজনীয়তা কমে আসে। কিন্তু চীনা কর্তৃপক্ষ এই প্রথা টিকিয় রাখতে চাইলে পাশ্চাত্য শক্তি বাধ্য হয়ে হাজার 1839 খ্রিস্টাব্দে শেষ পর্যন্ত চীনের সঙ্গে যুদ্ধে নামে। যুদ্ধে চীন পরাজিত হলে নজরানা প্রথার চিরতরে অবসান ঘটে, সূচনা হয় সন্ধি ব্যবস্থার।

Sunday, 9 May 2021

short question answer(কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর।

(১) লিনলিথগো প্রস্তাব কি?
উওরঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইংল্যান্ড বিপর্যয়ের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায় ভারতীয়় অথ ও মানব সম্পদ ব্যবহারের উদ্দেশ্য লগ লিনলিথগ ১৯৪০খ্রিস্টাব্দের ৪ঠা আগস্ট যে প্রস্তাব ঘোষণা করেন তা ইতিহাসে লিনলিথগো
 প্রস্তাব বা আগস্ট প্রস্তাব নামে পরিচিত।
 (২) সি আর ফর্মূলা কি?
উওরঃ ভারতকে দ্বিখণ্ডিত হওয়ার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য পাকিস্তানপন্থী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ কাছে  চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী 1944 খ্রিস্টাব্দের মার্চ এ এক সমাধান সূত্র তুলে ধরেন তা রাজাজী সূত্র বা সি আর ফর্মূলা নামে পরিচিত।
(৩) ভারতের স্বাধীনতা আইন কবে পাস হয়?
উওরঃ 1947 খ্রিস্টাব্দে চৌঠা জুলাই ভারতের স্বাধীনতা আইন পাশ হয়।
(৪) কে কবে কার কাছে 21 দফা দাবি পেশ করে?
উওরঃ1915খ্রিস্টাব্দে জাপান চীনের উপর 21 দফা দাবি পেশ করে।
(৫) তানাকা মেমোরিয়াল কি?
উওরঃ1927খ্রিস্টাব্দে জাপানের প্রধানমন্ত্রী তানাকা পূর্ব এশিয়ার সমস্যা সমাধানের জন্য যুদ্ধনীতি গ্রহণ করা উচিত বলে জাপান সম্রাটের কাছে যে অভিমত প্রেস করে তা তানাকা মেমোরিয়াল নামে পরিচিত।
(৬) স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি কে ছিলেন?
উওরঃ স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্টপতির ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ।
(৭) আজাদ হিন্দ ফৌজ কে কবে গঠন করেন?
উওরঃ ক্যাপ্টেন মোহন সিং 1942 খ্রিস্টাব্দে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করেন।
(৮) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?
উওরঃ তেজো ছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ।
(৯) রাসবিহারী বসু কে ছিলেন?
উওরঃ ইন্ডিপেন্ডেন্স লীগ এর সভাপতি ছিলেন রাসবিহারী বসু।
(১০) কে কবে প্রত্যক্ষ সংগ্রামের ডাক দেন?
উওরঃ 1946খ্রিষ্টাব্দে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ প্রত্যক্ষ সংগ্রামের ডাক দেন।
(১১) নৌ বিদ্রোহ কবে শুরু হয়?
উওরঃ 1946 খ্রিস্টাব্দের 18 ফেব্রুয়ারি প্রিন্স অব ওয়েলস নামক জাহাজে।
(১২) ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন নারীর নাম লিখ।
উওরঃ মাতঙ্গিনী হাজরা ,কনক লতা বড়ুয়া।
(১৩) হোচিমিন কে ছিলেন?
উওরঃ ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধের প্রাণপুরুষ ছিলেন।

Saturday, 8 May 2021

সমাজ সংস্কারক হিসেবে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান।

 (সূচনা)-  ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে ভারতবর্ষে যে সমস্ত সমাজ সংস্কারক এর আবির্ভাব ঘটেছিল ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি ভারতীয় জরাজীর্ণ সমাজ ব্যবস্থাকে নতুন করে গড়ে তোলার কাজে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন। তাই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন-“বিধাতা বিদ্যাসাগরের প্রতি বঙ্গভূমি কে মানুষ করিবার ভার দিয়েছে।"
            সমাজ সংস্কারের কাজে তিনি যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল সেগুলো নিম্নরূপ-
      
  (১) (বাল্যবিবাহের বিরোধিতা)-সমাজ সংস্কারক হিসেবে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সর্বশ্রেষ্ঠ অবদান হল বাল্যবিবাহের বিরোধিতা। বাল্যবিবাহের অভিশাপ থেকে সমাজকে মুক্ত করার জন্য তিনি সর্বশুভকরী পত্রিকায় বাল্যবিবাহ নামক প্রবন্ধে সর্বপ্রথম বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে কলম ধরেন এবং এর বিরুদ্ধে জোরালো আন্দোলন শুরু করেন। যার ফলে ব্রিটিশ সরকার মেয়েদের বিবাহ বয়স বাড়িয়ে 10 বছর ধার্য করেন।
(২) (বিধবা বিবাহ প্রবর্তন)-বিদ্যাসাগরের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কৃতিত্ব হল বিধবা বিবাহ প্রবর্তন। বিধবা বিবাহের পক্ষে সারা দেশজুড়ে আন্দোলন গড়ে তোলে ,যার ফলে ব্রিটিশ সরকার লর্ড ডালহৌসি 1856 খ্রিস্টাব্দে 26 শে জুলাই বিধবা বিবাহ আইন পাস করেন। এছাড়াও তিনি নিজে উদ্যোগে 82 টাকা ব্যয় করে 60 জন বিধবা রমণীর বিবাহ দেন এবং তিনি নিজেও পুত্র নারায়ন চন্দ্রের সঙ্গে এক বিধবা রমণীর ভবসুন্দরীর সঙ্গে বিবাহ দেন।
(৩)(কৌলিন্য প্রথার বিরোধিতা)-তৎকালীন সমাজের কৌলিন্য প্রথার ব্যাপক প্রচলন ছিল। অনেক পিতা-মাতা তাদের কুল রক্ষার উদ্দেশ্যে নাবালিক মেয়েকে খুব অল্প বয়সে বৃদ্ধের সাথে বিবাহ দিতেন। যার ফলে অনেক মেয়ের জীবনে সীমাহীন দুর্দশা নেমে আসতো। বিদ্যাসাগর তাই এই প্রথার বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন।
(৪) (বহু বিবাহের বিরোধিতা)-এছাড়াও সমাজ সংস্কারক বিদ্যাসাগর বহু বিবাহের বিরোধিতা করেছিলেন। তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থায় বিশেষত হিন্দু সমাজে বহুবিবাহ প্রথার প্রচলন ছিল। এ প্রথার বিরুদ্ধে তিনি তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন এবং 50 হাজার মানুষের স্বাক্ষর যোগাড় করে ব্রিটিশ সরকারের কাছে প্রতিবাদ পত্র জমা দেয়। এর পাশাপাশি 1971 খ্রিস্টাব্দে তিনি এর সম্বন্ধে দুটি পুস্তকের রচনা করেন।
        
[উপসংহার]=পরিশেষে বলা যায় যে সমাজ সংস্কারক হিসেবে ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থা যখন কুপ্রথায় পরিপূর্ণ সেই সময় ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তার সমাজ সংস্কারের মাধ্যমে ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থাকে নতুন করে গড়ে তোলেন।

জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের কারণ গুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো? এর প্রধান নীতি গুলি কি ছিল।

[সূচনা]=দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বে সমগ্র বিশ্ব ২টি শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ায় ঠান্ডা লড়াই এর সূচনা হয় কিন্তু স্বাধীনতার পর ভারতবর্ষ বিবাদমান জোটের কোনো টিতে যোগ না দিয়ে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে বৈদেশিক সম্পর্ক পরিচালনায় যে নীতি গ্রহণ করে তা জোট নিরপেক্ষ নীতি নামে পরিচিত।
 
[কারন]=জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের প্রধান কারণগুলি হল নিম্নরূপ-
        (১) (ভৌগোলিক সুরক্ষা)-এশিয়া মহাদেশের এমন একটা জায়গায় ভারতের অবস্থান যা তাকে মধ্যপ্রাচ্য ও দূরপ্রাচ্যের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে দেশে পরিণত করেছে। তাই বিভিন্ন দেশের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব জোট নিরপেক্ষ নীতি গ্রহণের ভারত কে প্রভাবিত করেছে।
         (২) (জাতীয় ঐক্য রক্ষা)-ভারতবর্ষের জোট নিরপেক্ষ নীতি গ্রহণের পাশ্চাত্যে ভারতের জাতীয় ঐক্য রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। কেননা সুপ্রাচীনকাল থেকে ভারত অহিংসা ,শান্তি , সহমর্মিতা ও সহনশীলতার আদর্শে বিশ্বাসী ছিল। এই সুমহান আদর্শ ও জাতীয় ঐক্য রক্ষার জন্য ভারত নিরপেক্ষ নীতি গ্রহণ করে।
            (৩) (আর্থসামাজিক উন্নতি)-১৯৪৭সালে লাভের ঠিক পরের মুহূর্ত থেকে ভারত এক গভীর তর আর্থসামাজিক সংকটের মুখে পড়ে।  ফলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাহলাল নেহেরু আর্থিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে ভারতের আর্থিক উন্নতি ঘটাতে  সচেষ্ট হন।
               (৪) (আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি)-দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ধনতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক পরস্পর দুই বিরোধী গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ফলে বিশ্ব যখন ঠান্ডা লড়াই এর আবহাওয়া মত্ত্ব, তখন ভারতবর্ষ কোন জোটে যোগ না দিয়ে নিরপেক্ষ নীতি গ্রহণ করে।
                  (৫)(তৃতীয় শক্তি জোট)-যে সমস্ত আদেশ ঠান্ডা লড়াই এর বাইরে থাকতে চেয়েছিল তাদের আয়তন ,জনসংখ্যা প্রভৃতি বিষয়ে ভারতের কাছে ছিল  খুব নগণ্য ।তাই ভারত নিজের উদ্দেশ্যে একটি তৃতীয় শক্তি জোট গঠন করে।

 [নীতি]=জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের প্রধান প্রধান নীতি গুলি হল- (১)-বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।
                          (২)-ছোট-বড় সমস্ত জাতি ও বর্ণের মধ্যে সমান অধিকার স্বীকার করা।
                        (৩)-বর্ণ বৈষম্য সমাজবাদী আন্দোলনকে প্রতিহত করা।
                         (৪)-বিভিন্ন দেশের জাতীয় মুক্তি আন্দোলনে সমর্থন করা।

Friday, 7 May 2021

চীনের ওপর আরোপিত অসম চুক্তি গুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো?

   সূচনা-  পশ্চিমী দেশগুলির যেমন আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স ,জাপান ,জার্মানি  ইত্যাদি দেশগুলি 1839 থেকে 1950 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে চীনের কিং বা চিং রাজার শাসনকালে চীনকে বিভিন্ন যুদ্ধে পরাজিত করে যে শোষণমূলক  চুক্তি চীনের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিল তা ইতিহাসে অসম চুক্তি নামে পরিচিত। চীনের ওপর আরোপিত এই অসম চুক্তি গুলি হল নিম্নরূপ- 
        
  (১) [নানকিং এর চুক্তি]=প্রথম অহিফেন যুদ্ধে চীন পরাজিত হয় 1842 খ্রিস্টাব্দের 29 আগস্ট বৃটেনের নানকিং এর চুক্তি স্বাক্ষরিত করতে বাধ্য হয়। এই চুক্তির শর্ত অনুসারে (১) হংকং বন্দর চিরকালের জন্য ইংরেজদের ছেড়ে দিতে হয়। (২) ক্যান্টন,সাংহাই,ফুচাও,নিংগপ ইউরোপীয় বণিকদের বাণিজ্য ও বসবাসের জন্য খুলে দিতে হয়।(৩) চীনে ব্রিটিশ আমদানি রপ্তানি পণ্য র ওপর ৫ভাগ শুল্ক ধায করা হয়।
 
  ( ২)[বগ এর চুক্তি]=নানকিং এর চুক্তি র কিছু কাল পরে পুনরায় ইংল্যান্ড চীনের ওপর 1843 সালে একটি অসম চুক্তি চাপিয়ে দেন মা বগ এর চুক্তি নামে পরিচিত।এই চুক্তি অনুযায়ী (১) ইংল্যান্ড চীনে অতিরাষ্টিক অধিকার লাভ করে।(2)চীন কোনো বিদেশি রাষ্ট্রকে ভবিষ্যতে যেসব সুযোগ-সুবিধা দিবে তা ইংল্যান্ড কেও দিতে হবে।

(৩)[ওয়াসিংয়ার চুক্তি]=ইংল্যান্ড এর মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র 1844খীঃ জুলাই মাসে দুর্বল চীনের ওপর ওয়াসিংয়ার অসম চুক্তি চাপিয়ে দেয় এবং চীনে অতিরাষ্টিক অধিকার লাভ করে।

 (৪)[হোয়ামপোয়ার চুক্তি]=ফ্রান্স চীনের ওপর1844খীঃ24অক্টোবর হোয়ামপোয়ার অসম চুক্তি চাপিয়ে দেয়।এই চুক্তির দ্বারা(১)ফরাসি বনিকদের জন্য চীনে নতুন পা৺চটি বন্দর খুলে দেয়।(২)ফ্রান্স চীনে অতিরাষ্টিক অতিরাষ্টিক অধিকার লাভ করে।

(৫)[আইগুনের চুক্তি]=অন্যান্য রাষ্ট্রের মতো 1856সালে28মে চীনের ওপর আইগুনের চুক্তি চাপিয়ে দেয় এবং চীনের উওরাংশের বেশ কিছু এলাকায় রাশিয়ার আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

(৬)[টিয়েনসিনের চুক্তি]=দ্বিতীয় অহিফেন যুদ্ধে চীন পরাজিত হয়ে 1854 সালে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড এর সঙ্গে টিয়েনসিনের চুক্তি স্বাক্ষর করেতে বাধ্য হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী (১) বিদেশে বণিকদের জন্য চীনের ১১টি বন্দর খুলে দেওয়া হয়।(২) বিদেশে বণিকদের বাণিজ্য শুল্ক কমানো  হয়।(৩) আফিম ব্যবসা আইনসম্মত বলে স্বীকৃতি হয়।

(৭)[শিমোনোসকির সন্ধি]=প্রতিবেশী করিয়াকে কেন্দ্র করে চীন ও জাপানের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হলে, জাপানের হাতে চীনের পরাজয় ঘটে এবং জাপানের সঙ্গে শিমনোসেকির অপমানজনক  সন্ধি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়। এই সন্ধির শত অনুযায়ী (১)চীন কোরিয়াকে স্বাধীনতা দেয়।(২) চিন তার বেশ কয়েকটি বন্দর জিপানের জন্য খুলে দেয়।(৩)চীন জাপানকে ২০০মিলিয়ন কিউপিন টেল ক্ষতিপূরণ দেয়।

(৮) [বক্সার প্রটোকল]=চিং বংশের শাসনকালে চীনে বিদেশি শক্তিগুলির শোষন, নির্যাতন ও আধিপত্যর বিরুদ্ধে চীনে বক্সার বিদ্রোহ শুরু হয় কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিদেশি সম্মিলিত বাহিনী বিদ্রোহ দমনে করে 1901খীঃচীনের ওপর বক্সার প্রটোকল নামে এক চুক্তি চাপিয়ে দেয় এই চুক্তি অনুযায়ী চীনের 25 দূর্গ ভেঙ্গে দেওয়া হয়।

Saturday, 1 May 2021

Short Questions Answers

 প্রশ্ন- হিন্দু কলেজ কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর- ডেভিড হেয়ার ,রাধাকান্ত দেব প্রমুখের সহযোগিতায় 1817 খ্রিস্টাব্দে হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।
 প্রশ্ন- মিত্র মেলা কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর- 1899 খ্রিস্টাব্দে মহারাষ্ট্রের বিপ্লবী নেতা বিনায়ক দামোদর সাভারকর মিত্র মেলা কে প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বিপ্লবীদের শারীরিক প্রশিক্ষণ দেয়ার লক্ষ্যে এই সমিতি গঠন করেন।
 প্রশ্ন- কলকাতা মেডিকেল কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর- 1835খ্রিস্টাব্দের 28 শে জানুয়ারি কলকাতায় মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।
 প্রশ্ন- আত্মীয় সভা কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর- রাজা রামমোহন রায় 1815 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় আত্মীয় সভা প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রশ্ন-গুলামগিরি নামক গ্রন্থের রচয়িতা কে?
উত্তর- মহারাষ্ট্রের সমাজ সংস্কারক জ্যোতিবা ফুলে গুলামগিরি নামক গ্রন্থ রচনা করেন।
প্রশ্ন-কোন সালে হিন্দু বিধবা পুনর্বিবাহ আইন পাশ হয়?
উত্তর-ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায় 1856 খ্রিস্টাব্দে 26 শে জুলাই হিন্দু বিধবা পুনর্বিবাহ আইন পাশ হয়।
প্রশ্ন-কে কবে মোহামেডান অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর-স্যার সৈয়দ আহমদ খান 1875 খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রশ্ন-ডিরোজিও সম্পাদিত দুটি পত্রিকার নাম কি?
উত্তর-পার্থেনন , হিন্দু পাওনিয়ার ইত্যাদি।
প্রশ্ন-হিন্দু কলেজের বর্তমান নাম কি?
উত্তর-হিন্দু কলেজের বর্তমান নাম হল প্রেসিডেন্সি কলেজ , যাত্রা 1855 খ্রিস্টাব্দে নামকরণ করা হয়।
প্রশ্ন-ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তর-1828 খ্রিস্টাব্দে রাজা রামমোহন রায়  ব্রাহ্মসভা প্রতিষ্ঠা করেন যা পরবর্তীকালে 1830 খ্রিস্টাব্দে ব্রাহ্মসমাজ নাম ধারণ করে।
প্রশ্ন-আদি ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তর-দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর 1866 খ্রিস্টাব্দের আদি ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করে।
প্রশ্ন-ভারত সভার প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তর-1876 খ্রিস্টাব্দে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ভারত সভা প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রশ্ন-কে কবে পটলডাঙা একাডেমী প্রতিষ্ঠা করে? উত্তর-ডেভিড হেয়ার 
1818 খ্রিস্টাব্দে পটলডাঙা একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেন যা বর্তমানে হেয়ার স্কুল পরিচিত।
প্রশ্ন-পার্থেনন কি?
উত্তর-ডিরোজিও সম্পাদিত একটি পত্রিকা হল পার্থেনন। একটি 1830 সালে প্রকাশিত হয়। এ পত্রিকায় নারী শিক্ষা ও নারী স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়।
প্রশ্ন-সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর- 1835 খ্রিস্টাব্দে যেসুইট মিশনারীরা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।

নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় এর ইতিহাস।The history of the Nalanda University.

সূচনা-   প্রাচীন ভারতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক                 অবিস্মরণীয় নাম হল নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাচীন ভারত তথা এশিয়ার অন্যতম প...